Bewakoofiyaan: ফাল্গুনের হাওয়ায় হারিয়ে যাওয়া এক আন্ডারেটেড গল্প!

 


সেই সময়টা এখনকার মতো না। ওটিটি প্ল্যাটফর্মের সহজলভ্যতা ছিল না, ইউটিউবেও পুরো সিনেমা পাওয়া যেত না। আমরা তখন সিনেমা দেখতাম ডিভিডি ক্যাসেটে, অনেকটা যত্ন করে। সেইরকম এক বিকেলে, ফাল্গুনের মিষ্টি হাওয়ার মতো এক অলস দুপুরে, আমি প্রথম দেখি 'Bewakoofiyaan'। আয়ুশ্মান খুরানা, সোনম কাপুর আর ঋষি কাপুর অভিনীত এই ছবিটা ছিল একেবারে অন্যরকম ; হালকা, বাস্তব আর একেবারে অন্তর ছুঁয়ে যাওয়ার মতো।

মোহিত আর মায়েরা- দু'জনেই কর্মজীবী, মেট্রোপলিটনের ব্যস্ত রুটিনে তাদের প্রেমটা একটু অন্যরকম। নেই বাড়াবাড়ি রোমান্স, নেই অতিনাটকীয়তা। আছে ছোট ছোট আনন্দ, ঝগড়া, বাস্তবতা আর একসাথে থাকার চেষ্টা। মোহিতের চাকরি চলে যাওয়া তাদের জীবনে যেমন টানাপোড়েন আনে, তেমনি মায়েরার বাবা (ঋষি কাপুর) মোহিতকে পছন্দ না করায় গল্পে যোগ হয় এক ধরণের মজার টানাপোড়েন।

এই সিনেমাটা আলাদা জায়গা করে নিয়েছিল আমার মনে, কারণ এর গল্পটা খুবই হালকা মেজাজের রোমান্টিক এক গল্প। চাকরি হারানো একটা ছেলের আত্মসম্মান, মেয়েটির সাহসী ভালবাসা আর একজন বাবা যিনি মেয়ে নিয়ে চিন্তিত। সব মিলিয়ে একটা চেনা জীবনের ছায়া। আয়ুশ্মান আর সোনমের কেমিস্ট্রি ছিল দারুণ আর ঋষি কাপুরের অভিনয় ছিল এক কথায় অনবদ্য।

ছবির গানগুলো এখনও মাঝে মাঝে মনে পড়ে যায়,  'Khamakhaan' আর 'Gulcharrey' শুনলেই মন ভালো হয়ে যায়। লোকেশনগুলো, অফিস লাইফ, ডেটিং দৃশ্য ; সব কিছু যেন আমাদের চারপাশের জীবনের প্রতিচ্ছবি।

আমার মতে 'Bewakoofiyaan' আন্ডাররেটেড একটা ছবি। মুক্তির সময় খুব বেশি প্রচার পায়নি, হয়তো গল্পটা অত “মসলাদার” ছিল না। ছবিটির গল্প ছিল পুরোদস্তুর হালকা মেজাজের কিউট এক ভালোবাসা আর দুটো সম্পর্কের গল্প। যেখানে কোনো বাড়াবাড়ি ছিল না, এমনকি ছিল না অহেতুক ড্রামা! যারা ছবিটা দেখেছে, তারা জানে; এটা একান্ত নিজের মতো করে বলা এক টুকরো গল্প। হাসি আছে, কষ্ট আছে, আবার আশা আছে। একে আন্ডারেটেড না বললে কি চলে?

আজও যখন পুরনো ডিভিডি তাক ঘাঁটি, তখন 'Bewakoofiyaan' এর সেই ক্যাসেটটা দেখে হালকা একটা হাসি আসে মুখে। ওটা শুধু একটা সিনেমা না বরং একটা সময়ের কথা, একটা অনুভবের কথা। এমন মুভিগুলো হয়তো সময়ের মুখে হারিয়ে যায়, কিন্তু যারা একবার দেখে ; তাদের মনে থেকে যায় অনেকদিন।

Post a Comment

Previous Post Next Post